1. newsiqbalcox@gmail.com : Somoy Bangla : Somoy Bangla
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৩১ অপরাহ্ন

সেন্টমার্টিনে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রবালদ্বীপ!

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩
  • ১১০ ভিউ সময়
হেলাল উদ্দিন সাগরঃ

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন করে পুলিশ ফাঁড়ির জমি ভরাট করা হচ্ছে। রাত-দিন ড্রেজিং মেশিন দিয়ে এসব বালি উত্তোলন করা হচ্ছে বলে জনা গেছে। পরিবেশ প্রতিবেশ সংকটাপন্ন (ইসিএ) এলাকায় এভাবে বালি উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বছরের পর বছর এরূপ কাজ করায় স্থানীয় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ বলেন, যারা আইন রক্ষার্থে নিয়োজিত তারাই প্রতিনিয়ত আইন ভঙ্গ করছে। ফলে স্থানীয় ও বাহিরের রিসোর্ট মালিকেরাও উৎসাহিত হয়ে সমুদ্রের বালি উত্তোলন করে রিসোর্ট রক্ষার চেষ্টা করছে। স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, কিছু লোক সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন করে তাদের স্থাপনা রক্ষার চেষ্টা করলেও তাদের আশেপাশের লোকজনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। যা সুবিধাবাদীরা বুঝার পরও কর্ণপাত করছেনা। পরিবেশ আইন অনুযায়ী সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন ও স্থাপনা তৈরি নিষিদ্ধ থাকলেও এই নিয়ম মানছে না স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও কিছু দুষ্কৃতকারী। শুধু পুলিশ ফাঁড়ি নয় এর আশেপাশের বেশ কিছু এলাকায়ও অবৈধ স্থাপনার পাশাপাশি বালি উত্তোলন করা হচ্ছে।

ইতোপূর্বে এই এলাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন একাধিক অভিযান পরিচালনা করলেও এই পর্যন্ত দৃশ্যমান উন্নতির কোন কিছুই হয়নি। এতে প্রতিবেশ পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন রক্ষার দাবী উঠেছে বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন গুলো থেকে।
গত ২৭ জুলাই সেন্টমার্টিন ডেইল পাড়া সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়ি পরিদর্শন গেলে দেখা যায়, পুলিশ ফাঁড়ির নেতৃত্বে সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে, একই সাথে বালি উত্তোলনে ব্যবহৃত নল, ড্রেজিং মেশিন, জিও টেক বস্তা এবং বালি উত্তোলনে নিয়োজিত বেশ কয়েকজন শ্রমিকের দেখা মিলে। এই বিষয়ে সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মোঃ সেলিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “তিনি ছুটিতে আছেন। বালি উত্তোলন বিষয়ে তিনি কিছুই জানেননা বলে জানান”। স্থানীয় শিক্ষিত সমাজ বলেন, পরিবেশ আইন অমান্য করে এমন জঘন্য কাজ করে গেলেও খবর নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।
দ্বীপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সমুদ্রের ভাঙ্গন থেকেপুলিশ ফাঁড়ি রক্ষার্থে এটা করা হচ্ছে’। সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন – হয়তো উপরের কোন নির্দেশনার আলোকে পুলিশ ফাঁড়ি এই কাজ করছেন। এই বিষয়ে এসপি মহোদয়ের সাথে বললে ভাল হয় বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান জানান, “প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন পরিবেশ প্রতিবেশ সংকটাপন্ন (ইসিএ) এলাকা। কেউ পরিবেশের ক্ষতি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এখানে কোন ধরনের বালি উত্তোল করা যাবে না এমনকি এখানে কোন ধরণের স্থাপনা করাটাও বেআইনি”।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু জানান, “সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকত পরিবেশ প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা। এখানে সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন করা মানে দ্বীপকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা। দ্বীপের ভারসাম্য হুমকির মুখে। এমতাবস্থায়, পুলিশ ফাঁড়ির এই কাজ করা মোটেও উচিৎ হয়নি। দ্রুত সমুদ্র সৈকত থেকে বালি উত্তোলন বন্ধ করা দরকার”।
তিনি আরও বলেন, “পরিবেশ আইনসহ সকল আইনকে পদদলিত করে নিয়মিত নানা স্থাপনা করে চলছে এক শ্রেনীর ভূমি দুস্যুচক্র। এখনই এদের লাগাম টেনে না ধরলে ভবিষ্যৎ মোটেও ভাল হবে না। এ ক্ষেত্রে আরো সচেতন হওয়া দরকার এলাকাবাসীর”।

শেয়ার করুন

আরো বিভন্ন নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 somoybanglatv.com
Theme Customization By Monsur Alam