-সিদরাতুল মুনতাহা বর্ণ
সময়ের এই আশ্চর্য অট্টালিকা যদি একদিন
কোনো এক প্রকান্ড ভূমিকম্পে ধসে মিলিয়ে যায় মমতাময়ী মৃত্তিকায় ;
তবে আমি নিশ্চিত,
সময়ের সেই ভগ্নস্তূপেও আমি বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হবো নিন্দুকের দ্বারা।
কিন্তু খানিক সূক্ষ্ম অনুসন্ধান করে দেখো,
দেখা যাবে সেই অট্টালিকার একেক কামরায়
ইতিহাসের ছায়া একেক রঙের।
একেক ইতিহাসের ‘আমি’ যেন একেক প্রকৃতির।
কোনোটিতে আমাকে পাওয়া যাবে নশ্বর অগ্নিকণা হিসেবে,
আবার কোনোটিতে আবিষ্কৃত হবে আমার একান্ত অচিন এক শৈলগহ্বর।
কখনো ঝন্ঝার মতো উদ্দাম সিন্ধুজোয়ার,
কখনো বা খুঁজে পাবে অতলান্ত নির্ঝরিণী।
হ্যাঁ।
সময়ের চপলতা কিংবা গতিহীনতা আমায় বিঁধেছে বারম্বার।
মাঝেমধ্যে কোনো ঘর ছেয়ে গিয়েছে স্নিগ্ধ ঝলমলে চন্দ্রিকায়,
তো এই বুঝি কোনো চিলেকোঠা গ্রাস করলো ভয়ানক গাঢ় অমাবস্যা।
পরক্ষণেই অন্য এক কুঠিরে শুরু হয় প্রবল কালবোশেখি
কিংবা কোনো কালরাত্রে নিজেকে পাই অতন্দ্রিতা হিসেবে।
এমন-ও হয়েছে সেই গুমট অট্টালিকায়
নিজেকে নিজেই উন্মাদ করে ছেড়ে দিয়েছি ছোট্ট কুঠিরে।
অথবা বাঁধা এক ছাদে পৌঁছে রক্তিম নয়নজোড়া
অশেষ শূন্যে স্থাপন করে বিকট চিৎকারে কাঁপিয়ে দিয়েছি
ভীষণ ব্যাক্তিগত এই সময়ের অট্টালিকা!
অথচ সেই অফুরন্ত কাল পার করে আমি আবার অজানা কোনো সালের
এক ফাগুনের হাওয়ায় দোল খেয়ে,
খোঁপায় রক্তজবা গুঁজে,
হাসিমুখে এসে সমাজের সাথে কাঁধ মিলাই বলেই হয়তো
সময়-অট্টালিকাটি প্রীতি-উপহারে পুনরায় আমার জন্য দাবানল প্রস্তুত করে!
আমি আবার ফিরে যাই ঐ বিবর্ণ স্থানে…
হাসি, কাঁদি, দগ্ধ হই…
তবুও কেন যেন সেই সময়-অট্টালিকাকে ছাড়তে চাই না!