নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদী সদর উপজেলা মাধবদী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ২০ বছরের অধিক সময় মানুষের যাতায়াতে ব্যবহৃত রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মান করেছেন মোঃইসহাক নামক স্থানীয় এক বাসিন্দা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটের সলিং বিছানো রাস্তার মধ্যেবর্তী স্থানে টিন দিয়ে ছোট্ট একটি ঘর নির্মান করে রাস্তা বন্ধ করে। রাস্তার মধ্যেবর্তী স্থানে নির্মিত ঘরটির পশ্চিম পাশে বিশাল সুতার গোডাউন ও সাধারণ মানুষের বসবাস।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল জানান,এটা প্রায় ৩০ বছর যাবৎ রাস্তা ছিল,এ রাস্তা দিয়ে দৈনিক প্রায় ২ হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করত,আমাদের চলাচলের রাস্তা ছিল এটি এবং গোডাউনের মালামালও আনা নেওয়া হতো দেখতাম, কিন্তু গত ২৮ তারিখ রাত ৪ টায় ইসহাক ও তাঁর ভাইয়েরা রাস্তার মাঝামাঝি স্থানে ঘর নির্মান করে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গোডাউন মালিক জানান,রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে আমার ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে,মালামাল আনা নেওয়া করতে পারছিনা,অথচ এখানে রাস্তা দেখেই গোডাউন নির্মান করেছিলাম,এতদিন ব্যবসায়ের মালামাল এ রাস্তা দিয়েই আনা নেওয়া করতাম, এখন রাস্তা বন্ধ করায় মালামাল আনা নেওয়া করতে পারছিনা।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মোঃ জব্বার মিয়া জানান,এই রাস্তাটি আমাদের দু-ভাইয়ের কেনা, যারা রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মান করেছে তারা আমার ভাইয়ের সন্তান ভাতিজা,৩০ বছর যাবৎ এটি মানুষের চলাচলের রাস্তা ছিল,পাশের গোডাউনের মালামাল আনা নেওয়া করত,রাস্তাটি থাকুক এবং মানুষ ব্যবহার করুক এটা ব্যক্তিগত ভাবে আমি চাইতাম,কিন্তু ভাতিজারা এ রাস্তা দখল করতে চায়,আমি বাঁধা দিতাম সবসময় , এতদিন এভাবেই আসছিলো,কিন্তু গত ২৬-তারিখ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়ে আমাকে জেল হাজতে যেতে হয়,এবং আমি নিশ্চিত হয়েছি যে আমার ভাতিজারা আমাকে জেল হাজতে পাঠাতে সাহায্য করেছে পুলিশকে, ভাতিজারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে,এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথেই তাদের উঠাবসা চলা ফেরা,সবসময় তারা আওয়ামী লীগের প্রভাব খাঁটিয়ে চলার চেষ্টা করে, আমি জেলে যাওয়ার পরের দিনই ২৭ তারিখ দিবাগত রাতে ভাতিজারা এ রাস্তা বন্ধ করে মাঝখানে ঘরটি নির্মান করে।এমতাবস্থায় তাঁরা রাস্তা বন্ধ করে মানুষের পথ আটকানো এটা অনৈতিক কাজ, আমি এর তিব্র নিন্দা জানাই।এবং রাস্তাটি পূনরায় চালু হোক সে দাবি করছি।
অন্যদিকে রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মান করা ব্যক্তি মোঃ ইসহাক জানান, জমিটা আমার বাবার কেনা,এতদিন প্রয়োজন ছিল না তাই আমরা ব্যবহার করিনাই,যার ফলে মানুষ আশা যাওয়া করত আমাদের জমির উপর দিয়ে, বর্তমান আমাদের প্রয়োজন হয়েছে তাই আমরা ঘর নির্মান করেছি।জমিটি আমাদের মালিকানা এবং আমাদের সমস্ত ডকুমেন্টস রয়েছে।আমাদের জমিতে আমরা রাস্তা দেব না,যেহেতু পৌরসভার নির্মিত বিকল্প রাস্তা রয়েছে, সাধারণ মানুষ সেটা ব্যবহার করুক,কিন্তু এ রাস্তা আমরা দেব না।
উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে অত্র ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনির শাহ আমাদের জানান,এলাকাবাসী এ বিষয়টি আমাকে জানালে,আমি সরেজমিনে গিয়ে যখন দেখলাম গোডাউনে আটকে থাকা গাড়িটা পর্যন্ত বের করতে পারছেনা,তখন আমি ইসহাককে বুঝিয়ে বলি আপাতত যেন তাদের গাড়িটা বের করে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করে দেয়,কিন্তু তাঁরা আমার কথা শুনে নাই।পরবর্তীতে আন্দোলনে দেশের পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার পর আমি আর এ বিষয়ে জানিনি।