কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নে জেলেদের সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম,
ক্যারিং খরচ নামে প্রতি জেলের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, চাল কম দেওয়া এবং অনেক নিবন্ধিত জেলে চাল না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিন বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ভিজিএফ চাল সহায়তা দেয় সরকার। এই চাল বিতরণ নিয়ে উপজলার হোয়ানক ইউনিয়নের জেলেদের মাঝে রয়েছে নানান অভিযোগ, প্রকৃত জেলেরা চাল না পাওয়া, ক্যারিং খরচ নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মৎস্য অফিস থেকে মাষ্টার রোল দিলেও ইউনিয়ন পরিষদে ইচ্ছে মতো তালিকা করে চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তারা।
উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের দুই ধাপে ৮৬ কেজি করে খাদ্যসহায়তা হিসেবে চাল পাবে জেলেরা। প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি করে চাল কাগজে কলমে দেয়া হয়েছে। যা জেলেরা হাতে পেয়েছে ৫০ কেজি করে। দ্বিতীয় ধাপে চাল বরাদ্দ রয়েছে ৩০ কেজি করে।
উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে হোয়ানক ইউনিয়নে দ্বিতীয় ধাপে ১৫৭৩ জন নিবন্ধিত জেলেদের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি জেলে পাবে ৩০ কেজি করে চাল। গত ২ আগস্ট থেকে ওয়ার্ড ভিত্তিক এই চাল বিতরণ শুরু করে পর্যায়ক্রমে শেষ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। তবে এই চাল বিতরণ নিয়ে জেলেদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। প্রতি জেলের কাছ থেকে একটা টুকেন দিয়ে ১০০ টাকা করে নিয়েছে ইউপি সদস্যরা এবং চালও দিয়েছে ২৬ কেজি করে। অনেক নিবন্ধিত জেলেও পায়নি এই চাল।
চাল না পাওয়া নিবন্ধিত জেলে বাহার উল্লাহ মাঝি বলেন, আমি সারাজীবন জেলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞায় আমাকে অতিকষ্টে সংসার চালাতে হয়েছে। আমি নিবন্ধিত জেলে হয়েও প্রথম ধাপে আমাকে ৫৬ কেজি চাল বরাদ্দের ২০ কজি চাল দিয়েছিল মেম্বার। তবে দ্বিতীয় ধাপে আমাকে চাল দেয়নি। এমনকি আমার মতো আমার বোটের অনেক জেলেও চাল পায়নি।
এবিষয়ে হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর কাসেম কে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জেলেদের কাছ থেকে নেওয়া ১০০ টাকা ক্যারিং খরচ, হোয়ানকের সকল নিবন্ধিত জেলেদের জন্য বরাদ্দ আসেনি তাই, সকল নিবন্ধিত জেলেদের দেওয়ার জন্য ৪ কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়েছে বলে জানান হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।
জেলেদের এসব অভিযোগ নিয়ে মহেশখালী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা ফারহান তাজিম এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ক্যারিং খরচ দিয়ে চাল গুলো পাঠানো হয়। ক্যারিং খরচের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। যদি জেলেরা ইউএনও মহোদয় বা আমাদের মৎস্য অফিস বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে আমারা ব্যবস্থা নিব।