বেতন ভাতা নয় ” শুধু স্বীকৃতি চায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী আ: গনি ( বকুল)। ১৯৪৪ সালের জামালপুর জেলার ইসলাম পুর থানার ৪ নং চর গ্রামে এক হত দরিদ্র পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহন করেন। বাবার আর্থিক অবস্থা সংকটের কারণে হয়নি তার পড়াশোনা, বাবার সাথে সংসারের হাল ধরতে হয় তাকেও। এখানেই শেষ নয় তার জীবন যুদ্ধ।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে,পাকিস্তানের পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য তিনি ঝাঁফিয়ে পড়েন মহান মুক্তিযুদ্ধে, যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পরে তাকে প্রথমে ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। প্রশিক্ষণ শেষে বকুল – ধানুয়া কামালপুর, কামারের চর, মুন্সির চর, হরিণ ধরা ও আট বাড়ি, বেলটিয়া রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধেও তিনি অংশ গ্রহন করেন এবং বীরত্বের সাথে কামালপুর ও জামালপুরকে – পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেন।
তিনি যে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন, নিম্নে তার কিছু সাক্ষ্য প্রমান দেওয়া হলো: দেশ স্বাধীনতা ঘোষণার পর তিনি ময়মনসিংহ গিয়ে সে তার অস্ত্র জমা দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এই বিষয়ে সাক্ষ্য দেন, তার এলাকার কিছু প্রবীণ ব্যক্তিগণ। মো: লেচু মন্ডল। (২) মো: বাদশা মন্ডল। (৩) মো: সদর আলী মন্ডল। (৪) মো: জমশেদ আলী মন্ডল। (৫) মো: আজহার আলী। (৬) মো: কালু মন্ডল। (৭) মো: মোবারক ফরাজি সহ আরও অনেকে।
বর্তমানে তিনি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার, (১) নং কাংশা ইউনিয়নের গান্দিগাও গ্রামে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন। আর্থিক সংকটের কারণে তিনি তার মুক্তিযুদ্ধের অংশ গ্রহনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারছেন না বলে – তিনি নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে ব্যর্থতা প্রকাশ করে তার পরিচিত কয়েকজন সহযোদ্ধাদের নাম ও যুদ্ধ চলাকালীন তার সেক্টর কমান্ডারের পরিচয় তুলে ধরেন যা এখানে দেওয়া হলো- (১১) নং সেক্টর কমান্ডার মাহফুজ। মুক্তিযুদ্ধা আলম, সাং৷ চন্দ্রা- জামালপুর। মুক্তিযুদ্ধা সৈয়দ আলী, টাঙ্গাইল। মুক্তিযুদ্ধা গেঁদা, গোয়াবাড়িয়া। মুক্তিযুদ্ধা সিদু,গোয়াবাড়িয়া। মুক্তিযুদ্ধা শাহাজাদা,মেলান্দহ।
তিনি বলেন, নিজের জিবন বাজী রেখে শত্রুর সাথে মোকাবেলা করেছি, শরীরে গুলি খেয়েছি সেই গুলি হজমও করেছি, তবুও যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করিনি, বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। কিন্তু বিনিময়ে কি পেলাম?। স্বাধীনতার (৫২) বছরে পেলাম না মুক্তিযুদ্ধা নামের সেই সৃকৃতি।
তিনি আরও বলেন, দেশ স্বাধীনের পর সবাই মুক্তিযুদ্ধের কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে। যার কারণে আমার সহযোদ্ধারা সবাই আজ নিজেকে নিয়ে গর্ব করে বলতে পারে আমি মুক্তিযুদ্ধা, আমি কাগজপত্র সময়মতো সংগ্রহ করতে পারিনি বলে কি? আমি মুক্তিযুদ্ধা হিসেবে আদৌ সৃকৃতি পাবো না?। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীতভাবে তার সৃকৃতির দাবি করেন।